ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যাম আবুল কালাম আজাদের ফেসবুকে একটি পোষ্ট ভাইরাল হয়। সেই ফেসবুক পোষ্টে তিনি লিখেছেন- ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার ভরাডোবা হাইওয়ে পুলিশের বিরূদ্ধে এক রিক্সাচালকের রোজগারের সব টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যার দরুন পরদিন ওই রিক্সাচালকের এক রকম না খেয়েই রোজা রাখতে হয়েছে। আর এই ভুক্তভোগী রিক্সাচালকের নাম মোঃ শামীম। সরোজমিনে তদন্ত করে জানা গেছে যে, গত ৪ঠা মে মঙ্গলবার মাঝরাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকা বাসষ্ট্যান্ড ফুটওভার ব্রিজের পাশে ইউটর্নে অটোরিক্সাচালক শামীমের কাছ থেকে কোন কারন ছাড়াই চাঁদা দাবি করে এক রকম জোরপূর্বক ৭০০টাকা নিয়ে যায় ভালুকা হাইওয়ে পুলিশ। পরদিন ৫ই মে বুধবার মাঝরাতে ওই রিক্সাচালক শামীম ভালুকার সিডষ্টোর বাসষ্ট্যান্ডে দাড়িয়ে ছিলেন। ঠিক সে সময় ভালুকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ তাঁর ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তখন রিক্সাচালক শামীম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে না চিনেই তাকে জিজ্ঞাস করেন স্যার কই জাইবেন। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামীমকে বলে দেন যে সে যাবে না। সথে তিনি এও বলেন যে, তার ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য তিনি অপেক্ষা করছেন। হঠাৎ শামীমের চেহারার দিকে নজর পড়ে চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের। তিনি শামীমের মলিন দেখে জিজ্ঞাস করেন তার কি হয়েছে। তখন শামীম হাইওয়েতে পুলিশের টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে খুলে বলেন। চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ সাথে সাথে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে রাত আড়াইটার দিকে শামীমের ছবি পোষ্ট দিয়ে ক্যাপশনে সমস্ত ঘটনাটি তুলে ধরেন। এরপরই চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের ফেসবুকের কমেন্টে আলোচনার ঝড় উঠে। রাতারাতি চেয়ারম্যানের দেওয়া পোষ্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের ফেসবুকের সেই পোষ্টটি হুবুহু অনুভূতি টিভির দর্শকদের নজরে তুলে ধরা হল- “আজ রাত ১.২০ মিনিটের সময় লোকটি সিডষ্টোর বাসস্ট্যান্ডে একটি অটোরিকশা নিয়ে দাঁড়ানো। আমি একাই দাঁড়িয়ে আছি, আমার গাড়ি ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে আসতে একটু দেরি করে। লোকটি এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলো কোথায় যাবেন আমি বললাম, না এখানেই। ’‘আমি যে ভালুকা যাবো বলি নাই। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম এত রাত্রে যাত্রী কি পাওয়া যায়? লোকটি বলল রোজা থেকে সারাদিন পারি না রাতেই যা পাই তা দিয়ে সংসার চালাই আর গাড়ির কিস্তি দেই। তবে স্যার কী করব গত রাত্রে ৬০০ টাকা ইনকাম হয়েছিল থানার কয়েকজন পুলিশকে থানার সামনে নামিয়ে যখন ইউটার্ন নেই তখন হাইওয়ে পুলিশ প্রথমে আমার গাড়িটি নিয়ে যাবে। এক পর্যায়ে বলে এক হাজার টাকা লাগবে। আমি অনেক অনুরোধ করে বলি স্যার আমি সারাদিন রোজা থেকে কাজ করতে পারি নাই ইফতারের পর থেকে ৬০০ টাকা পেয়েছি চাল-ডাল কিনব। কিন্তু কোন কথাই শুনলো না শেষ পর্যন্ত আমার কাছে আগের ১০০ টাকা ছিল মোট ৭০০ টাকা দিয়ে গাড়ি নিয়ে খালি হাতে বাসায় যাই। না খেয়ে রোজা থেকে আজ আবার পেটের দায়ে এত রাত পর্যন্ত আছি। আমার প্রশ্ন আমরা কোথায় বসবাস করি?’ ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে ভরাডোবা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান অনুভূতি টিভকে বলেন-“উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের ফেসবুক পোষ্টটি আমি দেখেছি। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।“
Leave a Reply