সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:৩২ পূর্বাহ্ন

স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০২২
  • ২৬৬ বার পঠিত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সর্বদা প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চাই না। কিন্তু যদি কোন বহিঃশত্রু হামলা করে তাহলে আমরা যথাযথভাবে মোকাবেলা করবো।’
প্রধানমন্ত্রী আজ শরিয়তপুরের জাজিরায় শেখ রাসেল সেনানিবাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূলনীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ আমরা এই নীতিতে বিশ্বাসী।’
তিনি আরো বলেন, কিন্তু দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার দেশের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন, শিক্ষিত ও সমৃদ্ধশালী করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি সশস্ত্র বাহিনীর প্রত্যেকটি সদস্য তাদের নিজ নিজ বুদ্ধি, পেশাগত দক্ষতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে তাদের সুনাম বৃদ্ধি করবে।’
তিনি উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি-১৯৭৪’ গঠন করেন এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি ও কম্বাইন্ড আর্মস স্কুলসহ সেনাবহিনীর জন্য একশ’রও বেশি ইউনিট ও ইনস্টিটিউশন স্থাপন করেন।

তিনি বলেন, ২০০৮ সাল থেকে টানা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তারা বঙ্গবন্ধুর ১৯৭৪ সালে প্রণীত জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতির ওপর ভিত্তি করে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করে একটি প্রশিক্ষিত ও যুগোপযোগী সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, এ ছাড়াও তারা ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পিস বিল্ডিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন এবং ‘জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি-২০১৮’ প্রণয়ন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে তার সরকার সেনাবাহিনীতে আধুনিক পদাতিক গেজেট অন্তর্ভুক্ত করেছে। ‘আমার লক্ষ্য ছিল আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি সদস্য যেন নিজেদের সময়োপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।’
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর দুই ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামাল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য হলেও কিন্তু পরে আমার মায়ের ইচ্ছায় কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
তিনি বলেন, শেখ জামাল রয়্যাল মিলিটারি একাডেমি স্যান্ডহার্স্টে নিয়মিত প্রশিক্ষণ শেষ করে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
তিনি মাওয়া ও জাজিরা সেনানিবাসের নামকরণ তাঁর ছোট ভাই শেখ রাসেলের নামে ‘শেখ রাসেল সেনানিবাস’ করার জন্য সেনা প্রধান এবং সেনা সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, বড় হওয়ার পর তার ছোট ভাই শেখ রাসেলের ইচ্ছা ছিল বড় হলে আর্মি অফিসার হওয়ার।
পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ২০০১ সালে সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করলেও পরে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে এটা বন্ধ করে তারা সেতুটি এখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে চেয়েছিল।
তিনি বলেন, পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর তাঁর সরকার সেতু নির্মাণে এগিয়ে যায়, কিন্তু মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগে সেতুর কাজে অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ায় বিশ্ব ব্যাংক।
তবে তিনি চ্যালেঞ্জ জানালে বিশ্বব্যাংক অভিযোগ তদন্তে ব্যর্থ হয় এবং কানাডার আদালতেও কোন দুর্নীতি খুঁজে পায়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘এই প্রসঙ্গে আমি তাদের কঠোর জবাব দেয়ার জন্য নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আজ আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি।’

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড ও সেনানিবাস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেডের চৌকস কন্টিনজেন্টের রাষ্ট্রীয় অভিবাদন গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদও বক্তব্য রাখেন।
নবম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং এবং সাভার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল শাহীনুল হক শেখ রাসেল ক্যান্টনমেন্টের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শেখ রাসেল সেনানিবাসের ওপর একটি অডিও-ভিজুয়াল ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

সূএ:বাসস

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 + 18 =

এ জাতীয় আরো খবর..