মুজিববর্ষ উপলক্ষে সিরাজগঞ্জে দুইটিসহ দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় দৃষ্টিনন্দন ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার ।
এরমধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৫০টি মডেল মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকাল সাড়ে ১১ টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এর মাধ্যমে ৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী । এসব মসজিদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ (খান সাহেবের মাঠ) এর পাশে ও সদর উপজেলার সামনে অবস্থিত দুইটি মসজিদের উদ্বোধন করেছেন । সিরাজগঞ্জ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ (খান সাহেবের মাঠ) এর পাশে অবস্থিত মসজিদের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ সদর ও কামারখন্দ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না, জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ, পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম বিপিএম, সিরাজগঞ্জ ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মোঃ ফারুক আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ্যাডঃ কে এম হোসেন আলী হাসান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, পৌর মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মনির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আবু ইউসুফ সুর্য্য, আলহাজ্ব ইসহাক আলী, ফিরোজ ভুঁইয়া, সাবেক এমপি সেলিনা বেগম স্বপ্না, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, জেলা যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল হকসহ প্রমুখ। সিরাজগঞ্জের ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মোঃ ফারুক আহমেদ জানান, জেলা পর্যায়ের মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদার মুক্তা কনষ্ট্রাকশনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ (খান সাহেবের মাঠ) এর পাশে ১৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চার তলা বিশিষ্ট এই মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ ও সদর উপজেলার সামনে ১২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ (খান সাহেবের মাঠ) এর পাশের মডেল মসজিদে প্রতিদিন ১২শ ও সদর উপ-জেলার সামনের মডেল মসজিদে ৮শ মুসল্লি এক সাথে নামাজ আদায় করতে পারবে। ইসলামি ফাউন্ডেশন সুত্রে জানা যায়, এটাই হচ্ছে বিশ্বে প্রথম কোনো সরকারের একই সময়ে এত বিপুল সংখ্যক মসজিদ নির্মাণের ঘটনা । এর মধ্য দিয়ে ইসলামকে পুরোপুরি জানার ফলে ধর্মান্ধতা, উগ্রতা ও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা কমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আলেম-ওলামারা। আরব বিশ্বের মসজিদ কাম ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের আদলে এসব মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত সু-বিশাল এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সে নারী ও পুরুষের আলাদা অজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরি, গবেষণাকেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয়কেন্দ্র, কোরআন ও হেফজ বিভাগ, শিশু- শিক্ষা, অতিথি শালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজ যাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, অটিজম কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র থাকবে। ৫৬০টি মডেল মসজিদে সারাদেশে প্রতিদিন ৪ লাখ ৯৪ হাজার ২০০ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪০০ জন নারী একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। লাইব্রেরি সুবিধার আওতায় প্রতিদিন ৩৪ হাজার পাঠক এক সঙ্গে কোরআন ও ইসলামিক বই পড়তে পারবেন। ইসলামিক বিষয়ে গবেষণার সুযোগ থাকবে ৬ হাজার ৮০০ জনের। ৫৬ হাজার মুসল্লি সব সময় দোয়া, মোনাজাতসহ তসবিহ পড়তে পারবেন। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা এবং গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা রাখা হয়েছে। ৪০ শতাংশ জায়গার ওপর তিন ক্যাটাগরিতে এই মসজিদগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে । জেলা পর্যায়ে চার-তলা, উপজেলার জন্য তিন-তলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চার-তলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে ।
Leave a Reply