সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন

মোবাইলে বয়স্ক বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা টাকা নিয়ে প্রতারণা

 খাদেমুল ইসলাম রাজ বীরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৬ মে, ২০২১
  • ৬৮৬ বার পঠিত

মোবাইল ব্যাংকিংমাধ্যম বিকাশ কিংবা নগদ এজেন্ট পরিচয়ে প্রতারক চক্রের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা দেশে নতুন কিছু নয়।

তবে এ ধরনের প্রতারণা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এমনকি প্রতারক চক্রের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা অসহায় ব্যক্তি’রা । উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সেবা কার্যক্রমের আওতায় টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। তবে আধুনিক এ ব্যাংকিং সুবিধা সম্পর্কে গরীব অসহায় ব্যক্তিদের সুস্পষ্ট ধারণা না থাকার সুযোগে, প্রতারকচক্র ধোঁকায় ফেলে কখনও নগদের এজেন্ট, আবার কখনও কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে গোপন পিন নম্বর। এর পর তা পরিবর্তন করে সহজেই বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। দিনাজপুর জেলায় বেশ কয়েকটি উপজেলা থেকে এ ধরনের প্রতারণার খবর পাওয়া গেছে। ২ নং পলাশবাড়ী ইউনিয়নের মধ্যে মদাতী,নন্দাইগাঁও,ঝলঝলী,ব্রাহ্মণভীটা,চাপাপাড়া গ্রাম সহ কয়েকটি উপজেলা এবং ইউনিয়ন গুলোর মধ্যে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, টাকা পাঠানোর পরে মোবাইল ব্যাংকিং নগদ কর্তৃপক্ষ ব্যক্তি দের ফোনে মেসেজ পাঠায়। এরপর ফোন করে প্রত্যেক ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বরে নগদ একাউন্ট চালু করতে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) সেট করতে বলা হয়। একাউন্ট চালু হলে ব্যক্তিরা টাকা তুলতে পারেন। কিন্তু টাকা মোবাইলে পৌঁছানোর পর থেকেই প্রতারকচক্র জেলা ও উপজেলা বিভিন্ন বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ভাতা প্রতিবন্ধী ভাতা ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে নগদের এজেন্ট, বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে কম টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানায়। এ সময় বেশি টাকা পাঠানো হবে বলে নগদের ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড চাইলে অনেক ব্যাক্তি তা প্রতারকদের দিয়ে দেন। এরপর এসব ব্যক্তিদের মোবাইল একাউন্ট থেকে টাকা কেটে যায়।এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এভাবে চলতে থাকলে, সরকার যে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা জন্য ব্যবস্থা করেছিল, তা বাস্তবায়ন হবে না। সংগত কারণেই অচেনা কাউকে পিনকোড বা পাসওয়ার্ড না দিতে ব্যক্তিদের মধ্যে পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার চালানো উচিত। পাশাপাশি যেসব ফোন নম্বর থেকে ব্যক্তিদের ফোন দিয়েছিল প্রতারকরা, তা সংগ্রহ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় তদন্ত চালানো উচিত। এভাবে অপরাধীদের চিহ্নিত করা গেলে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। মোবাইলের বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ভাতা প্রতিবন্ধী ভাতা টাকা নিয়ে প্রতারণাসহ সব ধরনের অপকর্ম বন্ধে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে এমনটাই প্রত্যাশা। উল্লেখ্য,বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের অঙ্গিকার হিসেবে ২০২১ সালের মধ্যে বয়স্কভাতাভোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে ক্ষমতা গ্রহণোত্তর ২০০৯-১০ অর্থ বছরে বয়স্কভাতাভোগীর সংখ্যা ২০ লক্ষ জন থেকে বৃদ্ধি করে ২২ লক্ষ ৫০ হাজার জনে এবং জনপ্রতি মাসিক ভাতার হার ২৫০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩০০ টাকায় উন্নীত করা হয়। ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৪৯ লক্ষ বয়স্ক ব্যক্তিকে জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হবে। চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ২৯৪০ কোটি টাকা। বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা কর্মসূচি বাস্তবায়নে অধিকতর গতিশীলতা আনয়নের জন্য বর্তমান সরকার পুনরায় ২০১০-১১ অর্থ বছরে এ কর্মসূচি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করে। বর্তমান সরকারের উদ্যোগে প্রবর্তিত এ কর্মসূচি সমাজসেবা অধিদফতর সফলভাবে বাস্তবায়ন করছে। এ কর্মসূচির আওতায় ২০২০-২১ অর্থ বছরে ২০ লক্ষ ৫০ হাজার জন ভাতাভোগীর জন্য জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে মোট ১২৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।প্রতিবন্ধী ভাতা চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৮ লক্ষ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে মাসিক ৭৫০ টাকা হিসেবে ১৬২০ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 12 =

এ জাতীয় আরো খবর..