সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:৫০ পূর্বাহ্ন

ভাষা শহীদদের স্মরণে জাতীয় শ্রমিক লীগ পটুয়াখালী জেলা শাখার বিনাস্র শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন।

স্টাফ রিপোর্টার,, এইচ এম মোশারেফ হোসেন সুজন।
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ৫৫৫ বার পঠিত

রক্তে আমার আবার প্রলয় দোলা/ফাল্গুন আজ চিত্ত আত্মভোলা/আমি কি ভুলিতে পারি/একুশে ফেব্রুয়ারি’। চেতনার পথে দ্বিধাহীন অভিযাত্রী বেশে বাঙালিকে সর্বদা চলার প্রেরণা জোগায় একুশ। আজ সেই অমর একুশে। শোক বিহ্বলতা, বেদনা আর আত্মত্যাগের অহংকারে উদ্বেলিত হওয়ার এই দিনে প্রথম প্রহরে ১২.০১ মিনিটে একুশে ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী পৌরসভা শহীদ মিনার চত্বরে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছেন। জাতীয় শ্রমিক লীগ পটুয়াখালী জেলা শাখার সদস্য বৃন্দ ও পটুয়াখালী জেলা সাখার সভাপতি মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল হাদি সোহাগ। আজ বাংলাদেশের পাশাপাশি ইউনেস্কোর ১৯৫টি সদস্য এবং ১০টি সহযোগী সদস্য রাষ্ট্র পালন করবে আমাদের একুশকে। পৃথিবীর ৬ হাজার ৯০৯টি ভাষার মানুষ পালন করবে দিবসটি। একুশের পথ ধরেই আমরা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, লাল-সবুজের পতাকা আর আত্মপরিচয়ের অধিকার অর্জন করেছি। তাই গৌরবোজ্জ্বল, প্রেরণায় মহিমান্বিত আর চেতনা শানিত করারও শক্তি হল একুশে ফেব্রুয়ারি। প্রতি বছর যখন বসন্ত আসে, কৃষ্ণচূড়ার শাখায় বসে দরাজ কণ্ঠ ছেড়ে কৃষ্ণ-কোকিল গান ধরে, পলাশ-শিমুল রক্তরাগে প্রকৃতিকে রাঙিয়ে ঝিরি ঝিরি দখিনা সমীরণের প্রবাহ ঘটায়, ছুড়ে ফেলে দেয় নির্জীবতাকে, তখনই চেতনায় নাড়া দিয়ে ওঠে যে, এসেছে ফেব্রুয়ারি। তাই তো বসন্তের সম্মিলনে আমাদের চেতনায় আল্পনা এঁকে দেয় অমর একুশে। কৃষ্ণচূড়ায় সদ্য ফোটা ফুলের পাশে বসে কোকিলের কুহুতান যেন একুশেরই আহ্বান। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-দল-মত নির্বিশেষে উদযাপন করার মতো এমন কালজয়ী দিন সত্যিই দ্বিতীয়টি নেই। দিনের পর দিন অপমানিত, লাঞ্ছিত হতে হতে বাহান্নে জেগে উঠল বাঙালি। জ্বলে-পুড়ে মরবে, তবু ও মায়ের ভাষার অপমান সইবে না। সেই ফাল্গুনে পিচঢালা পথে এগিয়ে চলল মিছিল। গগনবিদারী স্লোগানে প্রকম্পিত আকাশ-বাতাস। চলল গুলি। লুটিয়ে পড়ল মিছিলের অগ্রগামী তরুণের দল। জীবন দিলেন রফিক,শফিক, সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ নাম না-জানা আরও অনেকে। রক্তস্নাত হল রাজপথ। সেই রক্ত স্রোতধারায় সিক্ত মাটিতে নির্মিত হল শহীদ মিনার। সেই শহীদ মিনারে আজ গেছে কোটি বাঙালি। গেছে পৃথিবীর কোটি মানুষ। বিনম্র শ্রদ্ধায় তারা স্মরণ করবে মহান বীর ভাষাসৈনিক ও শহীদদের। বাহান্নর সেই সোনাঝরা রোদ্দুরে রক্তস্নাত মোদের গরব মোদের আশাকে যথাযথ প্রকাশে একুশ চিরদিনই আমাদের শানিত চেতনা। একুশ আমাদের বাঁচতে শেখায়, লড়াই করে অধিকার আদায় করতে শেখায়। একুশ বাঙালি জাতির গর্ব ও অহংকার। ভাষা সংগ্রামের রক্তস্নাত সেই বিস্ফোরণ শুধু বাঙালির মায়ের ভাষাকেই শৃঙ্খলমুক্ত করেনি; বাঙালির স্বাধিকার, স্বাধীনতা, সব ধরনের বৈষম্য দূর করার সংগ্রাম ও অনুপ্রেরণার উৎস। অমর একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির কাছে চির প্রেরণার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। একুশের প্রথম প্রহর থেকেই জাতি কৃতজ্ঞ চিত্তে ভাষা শহীদদের স্মরণ করছে। সবার কণ্ঠে বাজছে একুশের অমর শোকসঙ্গীত- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি…।’ একুশের চেতনা আমাদের আত্মমর্যাদাশীল করেছে। একুশ মানেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দ্রোহ, প্রতিবাদ আর যাবতীয় গোঁড়ামি ও সংকীর্ণতার বিরুদ্ধে শুভবোধের অঙ্গীকার। যে কারণে ১৯৫২ সালে সেই পলাশরাঙা প্রভাতের সূর্য অমিত সম্ভাবনার যেই স্বপ্ন-প্রত্যয় জাতির হৃদয়ে বপন হয়েছিল, সেই তেজোদীপ্ত বিদ্রোহের সুর আজও প্রতিটি ক্রান্তিকালে ধ্বনিত হয় বাঙালির হৃদয়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − 6 =

এ জাতীয় আরো খবর..