নীলফামারীতে মাদ্রাসার নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে গোপনে লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের সময় বঞ্চিত প্রার্থীদের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। আজ মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, নীলফামারী জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে তৃতীয় তলার হলরুমে লিখিত পরীক্ষার জন্য ১০ জন প্রার্থী নিয়ে যান নীলফামারী সদর টুপামারী ইউনিয়নের নিত্যানন্দী পাটোয়ারী পাড়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি হাবিবুর রহমান সেবু ও মাদ্রাসা সুপার ময়নুল ইসলাম। এ খবর জানা জানি হলে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারা পরীক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ নিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলামের দ্বারস্ত হন। স্থানীয় সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের মুখে পরীক্ষা স্থগিতের নোটিশ না দিয়ে তড়িঘরি করে অফিস বন্ধ করে সরকারি কলেজে কাজ আছে বলে সরে পড়েন জেলা শিক্ষা অফিসার। এর পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে পরীক্ষার সকল আয়োজন ছেড়ে একটি দালাল চক্রের সহায়তায় দ্রুত পালিয়ে যান মাদ্রাসার সভাপতি হাবিবুর রহমান সেবু ও মাদ্রাসা সুপার ময়নুল ইসলাম।
পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে না পারা মোঃ মিজানুর রহমান, মোঃ ময়নুল ইসলাম, আকবর আলী নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধের জন্য লিখিত অভিযোগ করেছেন জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর।
নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারা আকবর আলী বলেন, মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতি ৬ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ করে হাফিজুল ইসলামকে নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করে ফেলেছেন। আমাদেরকে জানতে না দিয়ে অতিগোপনে দালাল চক্রের মাধ্যমে জেলা শিক্ষা অফিসকে ম্যানেজ করে লোক দেখানো নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগের বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছে। অথচ আমরা ৩০ থেকে ৩৫ জনের মত বেকার যুবক নিরাপত্তা কর্মী পদে আবেদন করি।
মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, প্রতি পদে নিয়োগ পাইয়ে দেয়ার জন্য ৬ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন মাদ্রাসার সভাপতি হাবিবুর রহমান সেবু ও মাদ্রাসার সুপার ময়নুল ইসলাম।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, আসলে আমি একজন সদস্য পরীক্ষা কমিটির, পরীক্ষা বন্ধের ক্ষমতা মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান সেবুর কাছে।
নিয়োগ পরীক্ষা দিতে না পারা পরীক্ষার্থীরা আরো বলেন, একটি দালাল চক্র এভাবে গোপনে নিয়োগ পরীক্ষার ব্যবস্থা করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। এতে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয় আমাদের মত হাজারো বেকার যুবক, এই শিক্ষা অফিসের ভেতর গত ৩ মাসে ৫০টি নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে বিভিন্ন পদে।
এ বিষয়ে নিত্যানন্দী পাটোয়ারী পাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার ময়নুল ইসলাম ও সভাপতি হাবিবুর ইসলাম সেবুর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরীক্ষা শুরুর সময় বিকাল ৩টা থাকলেও ৪টা ৩০ মিনিটে পরীক্ষার সকল আয়োজন সম্পন্ন করে জেলা শিক্ষা অফিস।
Leave a Reply