কয়রা উপজেলার মহারাজপুরে কাউন চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন কাউন চাষি প্রভাষক শাহাবাজ আলী।
তার ক্ষেতে কাউন গাছে এখন দৃষ্টিনন্দন অসংখ্য ফল ঝুলছে। সম্প্রতি তিনি মহারাজপুর ইউনিয়নের মহারাজপুর গ্রামে তার নিজ ১ বিঘা জমিতে কাউন চাষ করে লাভের স্বপ্ন দেখছেন। আমাদী খান সাহেব কোমর উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক শাহবাজ আলী বলেন, ছোট বেলা থেকেই ব্যতিক্রম কিছু করার ইচ্ছা ছিল, তাই ইন্টারনেটের সাহায্যে ইউটিউবে ভিডিও দেখে, কৃষিবিদদের বই পড়ে এবং কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে প্রায় ৫ থেকে ৬ বছর থেকে বিভিন্ন জাতের আম, আনারস সহ শিম, ডেরস, পুইশাক, মিষ্টি কুমড়া, তরমুজ ও ধান চাষ করতে সক্ষম হয়েছি। এমনকি কিছুদিন আগে কলেজ শিক্ষক হিসেবে শিম চাষে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে।
এবার সরেজমিন কৃষি গবেষণা বিভাগের পরামর্শে ব্যতিক্রমধর্মী ফসল কাউন চাষ করতে পেরে নিজেই খুশি। কাউন চাষি প্রভাষক শাহাবাজ আলী আরও বলেন, আমাদের এই উপকূলীয় এলাকা লবণাক্ত জমিতে ফসল চাষ করে লাভবান হওয়া খুব কষ্টের। দিনরাত পরিশ্রম করে তারপর লাভের মুখ দেখা যায়। এ কারনে আমি এবার কাউনের চাষ করি। কম পরিশ্রমে খরচও খুবই কম কাউন চাষে লাভও বেশি। খরচের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, সরেজমিন কৃষি বিভাগ বীজ সার দিয়েছে আমার শুধু চাষ খরচে এক বিঘায় ১ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। এক বিঘা জমিতে কাউন উৎপাদন হবে ৬ থেকে ৭ মন। যার প্রতি কেজির মূল্য ৮০ থেকে ১ শ টাকা। সরেজমিন কৃষি গবেষনা বিভাগের এমএলটি সাইট কয়রার বৈজ্ঞানিক সহকারী জাহিদ হাসান বলেন, এবছর আমরা বারি কাউন ২ চাষের জন্য দিয়েছিলাম এটি অল্প খরচে পতিত জমিতে লাভজনক ফসল। কাউন সম্পর্কে খুলনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ হারুনর রশিদ বলেন, কাউনের চাল আমাদের অনেকের পরিচিত একটি শস্য। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এই কাউনের চালকে একটি অন্যতম সুপারফুড হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। কারন ছোট দানাবিশিষ্ট কাউনের চালে আছে প্রোটিন, ফাইবার, আ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ অনেক কিছু উপকারী পুষ্টি উপাদান যা আমাদের রক্তে মিশে থাকা এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। কাউনের চালে থাকা পটাশিয়াম আমাদের শরীরে লবনের ভারসাম্য বজায় রেখে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে এবং কাউনের চালে পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশ থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে। এতে ভিটামিন সি রয়েছে।
Leave a Reply