মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন

কথা বললেই চাপাতি ও হাতুড়ির বাড়ি হুমকি কয়রায়। 

মোঃ রউফ কয়রা উপজেলা প্রতিনিধি। 
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৪ জুলাই, ২০২১
  • ৬১৪ বার পঠিত
খুলনা জেলা  কয়রা উপজেলার, কয়রা সদর ইউনিয়নের উত্তর মোদিনাবাদ এলাকার  কপোতাক্ষনদীর  ভাঙ্গন কবলিত স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কোন ভাবেই থামছে না।
বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে বালু মজুদ ও বিক্রির ঘাট। আর এসব অবৈধভাবে গড়ে উঠা ঘাটের বালু বহনকারী লাইসেন্স বিহীন  ট্রলি ও ট্রাক্টরগুলো  বেপোরোয়াভাবে চলাচলে ক্ষতি মুখে পড়ছে উপকূলের ইটের সলিংক রাস্তা গুলো।    এদিকে যেমন হুমকিতে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ অপরদিকে গ্রামীণ সড়কগুলোও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।এর ফলে কয়রা সদরের একমাত্র মদিনাবাদ লঞ্চঘাট  সংলগ্ন পল্টনের নবনির্মিত যাতায়াত রাস্তা ও সদ্য নির্মিত পাউবার বেরিবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।

৪ জুলাই উপজেলা সদরের স্পর্শ কাতর ভাঙ্গন কবলিত মদিনাবাদ লঞ্চঘাট থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা অবস্থায় বালু সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর কে আটক করেছে কয়রা থানা পুলিশ। স্থানীয় ভুক্তভোগীরা বলেন বালুর ব্যাপারে কথা বললেই চাপাতি ও হাতুড়ি নিয়ে জীবননাশের হুমকি দেয় এর আগে একই স্থান থেকে বালু উত্তোলনের রিপোর্ট প্রকাশ করায় স্থানীয় সাংবাদিক সুভাষ দত্ত কে পিটিয়ে জখম করে পঙ্গু করে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে থানায় মামলা ও হয়। যে কারণে সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে কারো মুখ খোলার সাহস নেই। উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়,কয়রা উপজেলায় নির্দিষ্ট কোন বাবু মহল নেই বা সরকারী ভাবে ঘাট ইজারা প্রদান হয় নাই। ইজারার শর্তানুযায়ী ইজারাকৃত নির্দিষ্ট ঘাট ব্যতীত অন্য যেকোন স্থানে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। অভিযোগ উঠেছে সরকারী নিয়মনীতি না মেনে কতিপয় স্বার্থনেশী মহল প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির নাম ব্যবহার করে কপোতাক্ষর ভাঙ্গন কবলিত স্থান ছাড়াও  বিভিন্ন স্থান থেকে  অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি তার তাদের  নেতৃতে উপজেলার কপোতাক্ষ, শাকবাড়িয়া,নদীর বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।এমনকি উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়েও বালু তোলার অভিযোগ রয়েছে যা তে করে হুমকির মুখে রয়েছে ফসলি জমি ও বসতি ঘর। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির ছত্রছায়ায় কতিপয় ব্যক্তি কপোতাক্ষ নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে নদীর পাশে স্তুুপ করে দেদারছে বিক্রয় করছে। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলেই তাদের বলা হয় উপজেলা চেয়ারম্যানের বালু।এলাকাবাসীর অভিযোগ, অব্যাহতভাবে ভাঙ্গন কবলিত স্থান থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে লঞ্চঘাট সংলগ্ন  সদ্য নির্মিত পাউবার বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।দীর্ঘদিন পল্টনের সাথে যোগাযোগ রাস্তা না থাকায় আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিলো লঞ্চে যাতায়াত করতে।এর আগে অনেকবার ভালু উত্তোলনের ফলে মদিনাবাদ লঞ্চঘাট স্থান ভেঙ্গে যায়। স্থানীয় এমপির প্রচেষ্টায় পল্টনের সংযোগ রাস্তা হয়েছে কিন্তু সেটাও অবৈধ বালু উত্তোলের ফলে হুমকির মুখে।লঞ্চঘাট সংলগ্ন ভাঙ্গন কবলিত বেড়ি বাঁধের ধারে উচ্চ মজুদ করে বিক্রি করছে। ফলে ভাঙ্গন কবলিত নগ্ন স্থান ওজনের চাপে  ধ্বসে যেতে পারে।
উপজেলা সদরে  এভাবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও প্রকাশ্যে তা বিক্রয় করায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।কেউ কেউ বলছে এতো ক্ষমতার উৎস কোথায়। একদিকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে অপরদিকে নদী ভাঙ্গনসহ নানা বাঁধ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।সরেজমিন গেলে মদিনাবাদ লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ এই ঘাট সংলগ্ন ভাঙ্গন কবলিত এলাকা থেকে অব্যাহতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে  নদী ভাঙ্গন আতঙ্কে আমরা দিনারাত জাপন করছি।বার বার বলার পরেও কিছু হচ্ছে না পুলিশ প্রশাসন এসে বন্ধ করে যায় চলে যাওয়া পর আবার  তাই চালু হয় । তিনি আক্ষেপ করে বলেন যে, কোনো অশুভ শক্তির কারণে এটা বন্ধ হচ্ছে না তাছাড়া উত্তোলনকৃত বালু নগ্ন বাঁধের ওপর স্তুপ করে রাখায় ওজনের চাপে বাঁধ যেকোনো মুহূর্তে ধ্বসে যেতে পারে। এ মুহূর্তে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ সহ স্তূপীকৃত বালু সরানো জরুরি।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, মদিনাবাদ থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়ার পরই তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আবার যদি কেউ বালি তোলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন,অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনকারী (বালু দস্যু) কাউকে ছাড় দেয়া হবে না

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 6 =

এ জাতীয় আরো খবর..